একটি সাইকেল দিয়েও স্বপ্ন দেখানো যায় । মাস্তুল স্বাবলম্বী প্রজেক্ট
- Mastul Foundation |
- February 28, 2022
১০০ অস্বচ্ছল পরিবারকে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগে মাস্তুল টিম গিয়েছিলো সৈয়দপুর,নীলফামারীতে। সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হলো এই ১০০ জনের মধ্যে ২০% উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যাদের একটি করে বাই সাইকেল প্রদান করা হয়েছে। স্কুল দূরে হওয়ার কারণে প্রায় অনেকটা পথ পায়ে হেটে যেতে হতো আগে। এই আয়োজনের পর তাদের স্কুলে আর পায়ে হেটে যেতে হচ্ছে না।
নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরের প্রান্তিক জনপদের স্কুল শিক্ষার্থী রিনা আক্তার। স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণিতে পড়ছে সে। বাড়ি থেকে তার স্কুল ৫ কিলোমিটার দূরে। গ্রামের রাস্তা হওয়ার কোনো যানবাহনও চলে না। নিজস্ব সাইকেল না থাকলে হেঁটে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। তাই হেঁটেই যাওয়া আসা করতে হয়। ক্লান্তির কারণে প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া কঠিন হয়ে যায়। তবুও যেতে হয়।
একই এলাকার আরেক স্কুল শিক্ষার্থী বকুল। দরিদ্র ঘরের সন্তান হওয়ায় পড়ালেখার পাশাপাশি উপার্জন করে পরিবারকে দিতে হয়। বকুল ও তার মা নকশিকাঁথা ও হাতের কাজের বিভিন্ন জিনিস বানিয়ে গ্রাম্য হাটে নিয়ে বিক্রি করে। তবে হাট বাড়ি থেকে হাঁটা পথে প্রায় ৬-৭ কিলোমিটার, তাই মাসে একবার বিক্রির জন্য নেওয়া হয় এবং যাতায়াতে অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। এছাড়া স্কুলে হেঁটে যাওয়ার বিষয় তো রয়েছেই।
অবশেষে রিনা, বকুলদের কষ্টের দিন শেষ হয়েছে। স্কুলে যাওয়ার জন্য এ দুই শিক্ষার্থীসহ ওই এলাকার ২০ জন শিক্ষার্থীকে একটি করে সাইকেল উপহার দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মাস্তুল ফাউন্ডেশন। এরই সঙ্গে ৮০ পরিবারকে স্বাবলম্বী করার জন্য সেলাই মেশিন, দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসার উপকরণও কিনে দিয়েছে সংগঠনটি।
উত্তরবঙ্গের অবেহেলিত অসহায় পরিবারের শিক্ষার্থী রিনা জানায়, মাস্তুল থেকে সাইকেল পেয়েছি, এখন স্কুলে যাওয়া সহজ হয়ে যাবে। বকুল বলে, আমার ও মায়ের তৈরি উপকরণ সহজে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারবো। তাই আমি ও আমার মা খুব খুশি। এখন আমরা পড়ালেখা করে আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারবো।
মাস্তুল ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক কাজী রিয়াজ রহমান জানান, অসহায় দরিদ্র মানুষেরা সবসময় দরিদ্র বৃত্তের ভেতরেই পড়ে থাকে। দেশের জিডিপি প্রতি বছর বাড়ে তবে এই অসহায়দের আয় কমতেই থাকে। আর তাই সহায়তা নিয়ে অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছে মাস্তুল ফাউন্ডেশন। কক্সবাজার, ফেনী, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, রংপুর, গাজীপুর, বরিশালসহ দেশের ১২টি জেলায় এ কার্যক্রম চলবে।
কাজী রিয়াজ রহমান বলেন, খুব বেশি কিছু নয়, ‘একটি সাইকেল দিয়েও স্বপ্ন দেখানো যায়’, আমরা সে কাজটি করছি।